IQNA

কুরআন তিলাওয়াত একটি অনন্য শিল্প/২৯

স্মৃতিচারণায় এক ঐশী কন্ঠস্বরের অধিকারী

16:31 - March 21, 2023
সংবাদ: 3473503
তেহরান (ইকনা): হয়তো খুবই কম সংখ্যক ক্বারিই হবেন যারা শেইখ সাইয়াদের মত এতটা তিলাওয়াতের বাচন, শব্দচ্চারণ সক্ষমতা, সুর এবং কুরআন তিলাওয়াতের নানাবিধ পারদর্শিতার সাথে পরিচিতি। এই মিশরীয় ক্বারি ছিলেন তেলাওয়াতের দিক থেকে অনেক পারদর্শী এবং বিশেষ পদ্ধতির অধিকারী। তার এই পদ্ধতি পরবর্তীতে “মকতবে সাইয়াদিয়া” নামে পরিচিত হয় এবং তিনি নিজে “হীরক কণ্ঠী” উপাধি পান।


মিশরীয় প্রসিদ্ধ ক্বারি শেইখ শা’বান আব্দুল আজিজ সাইয়াদ, ২০শে সেপ্টেম্বর ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে একটি কুরআন প্রেমী পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা শেইখ আব্দুল আজিজ ইসমাইল সাইয়াদ নিজের শহরের উত্তম মানুষ ও সুন্দর কণ্ঠস্বরের অধিকারী ছিলেন। আশপাশের অঞ্চলগুলোতে তার সুখ্যাতি ছিল।
জনপ্রিয়তার কারণে, শাবান সায়াদ ভক্তদের জন্য বিভিন্ন কোরআনের মজলিশে যেতেন এবং কোরআন তেলাওয়াত করতেন। এই মিশরীয় ক্বারি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হওয়ায় তার সময়ের অন্যান্য ক্বারি থেকে আলাদা ছিলেন।
তিনি ১৯৯৬ সালের ৩১শে জুলাই আন্তর্জাতিক ক্বারির সম্মাননা পান এবং ১৯৭৫ সালে মিশরের রেডিওতে ক্বারি হিসেবে যোগদান করেন।
এই মিশরীয় ক্বারি সুন্দর কণ্ঠ, দীর্ঘ শ্বাস এবং নানান স্তর থেকে শব্দ উচ্চারণের পারদর্শিতার কারণে মিশরের শ্রেষ্ঠ কারীদের মধ্যে বিশেষ স্থান লাভ করেন।
শেইখ সাইয়াদ “প্রভাতের রাজা”, “আন্তর্জাতিক ক্বারি”, “ঐশী কণ্ঠস্বরের অধিকারী”, “ক্বারিদের নাইট”, “মাহফিলের তারকা” সহ নানান সম্মানসূচক উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি তার জীবনকে সবচেয়ে বেশি কুরআন তিলাওয়াতের পিছে ব্যয় করেছেন। এছাড়া তিনি কুরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে কাজ করা, বন্ধুদের সাথে থাকা এবং আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে কাজ করাকে পছন্দ করেছেন।
মিশরীয় সংগীত-বোদ্ধা মরহুম আম্মার শারিয়ী এই ক্বারির সম্বন্ধে বলেছিলেন, “শেখ সাইয়াদের কণ্ঠ শুনে আমি অবাক হয়ে যেতাম। কারণ তিনি সঙ্গীতের সমস্ত প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গে ফেলেছেন। শাবান সাইয়াদ তার তিলাওয়াতে সম্পূর্ণ সাবলীলভাবে কাজ করেন এবং পনির প্রবাহের মতো কণ্ঠকে সম্পূর্ণভাবে নিচে নামিয়ে আনতে পারেন।”
শেইখ সাইয়াদ বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক পুরস্কার, পদক এবং স্বীকৃতি পেয়েছিলেন, যার মধ্যে সর্বশেষ ছিল ব্রুনাইয়ের রাজার সম্মাননা পদক।
এছাড়াও তিনি জর্ডান, সিরিয়া, ইরাক, ইন্দোনেশিয়া, ফ্রান্স (প্যারিস), ইংল্যান্ড (লন্ডন) এবং আমেরিকা সহ বহু আরব, ইসলামী এবং অ-ইসলামী দেশ ভ্রমণ করেছেন।
১৯৯৪ সালে, তার মধ্যে কিডনি বিকলতার লক্ষণ দেখা দেয় কিন্তু তা সত্ত্বেও, এই অসুখ তাকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলার আগ পর্যন্ত তিনি কুরআন তিলাওয়াত চালিয়ে গেছেন।
শেইখ শা’বান আব্দুল আজিজ সাইয়াদ ১৯৯৮ সালের ২৯শে জানুয়ারি ঈদুল ফিতরের দিন ৫৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
কি-ওয়ার্ড: মিশরীয় ক্বারি, কুরআন তিলাওয়াতের বিভিন্ন ধরন, আন্তর্জাতিক ক্বারি, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়।

captcha