পবিত্র কুরআনের ৬১তম সূরা’র নাম সাফ। ১৪টি আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি পবিত্র কুরআনের ২৮তম পারায় অবস্থিত। এই সূরাটি মাদানী সূরা এবং নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরাটি ১১১তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
এই সূরাটিকে " সাফ" বলার কারণ হল এই শব্দটি চতুর্থ আয়াতে এসেছে, যা জিহাদীদের সারিকে নির্দেশ করে। এই সূরায় উল্লিখিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে আল্লাহর তসবিহ ও প্রশংসা, যাদের কথা তাদের কাজের মত নয় তাদের দোষী সাব্যস্ত করা ও শাস্তি দেওয়া, আল্লাহর দ্বীনের চূড়ান্ত বিজয় এবং এর সার্বজনীনকরণ এবং তা প্রতিরোধ করার জন্য বিরোধীদের প্রচেষ্টার নিষ্ফলতা ও মানুষকে তাদের ধন-সম্পদ ও জান দিয়ে জিহাদ করতে উৎসাহিত করা।
এই সূরা মুমিনদেরকে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে এবং ধর্মের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উৎসাহিত করে। এই সূরায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এই ধর্মটি আল্লাহর কাছ থেকে একটি উজ্জ্বল আলো যা অধার্মিকরা নিভিয়ে দিতে চায়। এছাড়াও ইসলামমের নবী (সা.) আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের কাছে সত্য দ্বীন তুলে ধরার জন্য এই অবস্থানে পৌঁছেছেন; এই কথাটি হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.) বনী ইসরাইলের কাছে বলেছিলেন।
এই সূরাতে আরও জোর দেওয়া হয়েছে যে ঈমানদার তথা বিশ্বাসীরা কখনই যা নিজেরা করে না, তা অন্যদের কাছে সুপারিশ করবেন না এবং তারা যা প্রতিশ্রুতি দেয় তা রক্ষা করেন। খারাপ কথা বললে তাদের অন্তরে বিচ্যুতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে; ঠিক যেমন হযরত মুসা (আ.)-এর গোত্রের মধ্যে এ বিচ্যুতি সৃষ্টি হয়েছিল।
এই সূরার শেষ আয়াতে হাওয়ারিন তথা সঙ্গীদের হযরত ঈসা (আ.)-এর বিশেষ ও নির্বাচিত সঙ্গী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই আয়াতে বলা হয়েছে
«نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ و َفَتْحٌ قَرِیبٌ»
অর্থ: আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও আসন্ন বিজয় রয়েছে।
সূরা সাফ, আয়াত: ১৩।
এই আয়াতে মু’মিনদেরকে নিশ্চিত বিজয়ের খবর দেওয়া হয়েছে। কিছু মুফাস্সির বলেছেন: এই আয়াতে ইসলামের নবী (সা.) এর সময়ে মক্কা বিজয়ের কথা বলা হয়েছে। অপর দিকে কিছু মুফাস্সির বলেছেন: এই আয়াতে মু’মিন তথা বিশ্বাসীদের চূড়ান্ত বিজয়ের কথা বলা হয়েছে যা শেষ জামানায় ঘটবে।