IQNA

কুরআনের সূরাসমূহ/৪১

সূরা "ফুসসিলাতে" কুরআনের ক্ষমতা সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করা হয়েছ

19:25 - November 22, 2022
সংবাদ: 3472866
তেহরান (ইকনা): মুসলমানদের অন্যতম বিশ্বাস হল পবিত্র কুরআনকে কখনোই বিকৃতি করা সম্ভব নয়। ইতিহাস জুড়ে কুরআনের অক্ষয়তা। এর উপর ভিত্তি করে, পবিত্র কুরআন সেই একই যা ইসলামের নবী (সা.)এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল এবং এতে একটি শব্দও কমানো বা সংযোজন করা হয়নি। এটিও কুরআনের অন্যতম অলৌকিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।

পবিত্র কুরআনের ৪১তম সূরাকে " ফুসসিলাত" বলা হয়। ৫৪টি আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি কুরআনের ২৪ এবং ২৫ পারায় অবস্থিত। মাক্কী এই সূরাটি নাযিলের ক্রমানুসারে ৬১তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
" ফুসসিলাত" শব্দের অর্থ "সুস্পষ্ট বিবরণ"। কেউ কেউ এই শব্দটিকে "বিভাগ" বা "অধ্যায়" হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এই শব্দটি এই সূরার তৃতীয় আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাই এই সূরাটি ফুসসিলাত নামে পরিচিত।
সূরা ফুসসিলাতে কুরআন থেকে অবিশ্বাসীদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই সূরার বিভিন্ন অংশে এই বিষয়টির পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। এই সূরার প্রথম ছয়টি আয়াতে মুশরিকগণ যে এই ঐশী গ্রন্থটিকে অস্বীকার করেছে যে বিষয় অনুসরণ কর হয়েছ এবং পরবর্তীতে ২৬ নম্বর আয়াতে একই বিষয় আবার উল্লেখ করে বলা হয়েছে:
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَا تَسْمَعُوا لِهَذَا الْقُرْآنِ وَالْغَوْا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَغْلِبُونَ:
অবিশ্বাসীরা বলে, ‘তোমরা এ কুরআন শ্রবণ করো না এবং তা আবৃত্তিকালে শোরগোল সৃষ্টি কর; যাতে তোমরা জয়ী হতে পার।’
এবং পরবর্তীতে এই সূরার ৪০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:
إِنَّ الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي آيَاتِنَا لَا يَخْفَوْنَ عَلَيْنَا أَفَمَنْ يُلْقَى فِي النَّارِ خَيْرٌ أَمْ مَنْ يَأْتِي آمِنًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ إِنَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহে বক্রপথ অবলম্বন করে তারা আমার অগোচর নয়। যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে শ্রেষ্ঠ; না যে কিয়ামতের দিন নিরাপদে উপস্থিত হবে সে? তোমাদের যা ইচ্ছা কর, নিশ্চয় তোমরা যা কর, তিনি তার দ্রষ্টা।
সূরার শেষে আরও বলা হয়েছে:
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ كَانَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ ثُمَّ كَفَرْتُمْ بِهِ مَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ هُوَ فِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ
বল, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি এ (কুরআন) আল্লাহর নিকট হতে (অবতীর্ণ) হয়ে থাকে এবং তোমরা তা প্রত্যাখ্যান কর, তবে যে ব্যক্তি ঘোর বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত আছে তার অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত আর কে?
সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৫২।
পবিত্র কুরআনকে যে বিকৃতি করা যাবে না, তা সাধারণ মুসলমানদের অন্যতম বিশ্বাস, যার ভিত্তিতে তারা বিশ্বাস করে যে, বর্তমানে মুসলমানদের হাতে যে কুরআনটি রয়েছে ঠিক সেইটিই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে কোন কিছু যোগ বা বিয়োগ করা হয়নি।
মুফাস্সিরগণ এবং ধর্মতাত্ত্বিকগণ যেকোনো ধরনের বিকৃতিকে প্রত্যাখ্যান ও অস্বীকার করার জন্য আয়াত ও রেওয়ায়েত উল্লেখ করেছেন। সূরা ফাসলাতের ৪১ এবং ৪২ আয়াতে এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।
এই সূরায় উত্থাপিত অন্যান্য বিষয়গুলি হল: আল্লাহর একত্বের সমস্যা, শেষ নবী (স.)এর ভবিষ্যদ্বাণী, কুরআনের নাযিল ও গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্য, পুনরুত্থানের সমস্যা এবং পুনরুত্থানের শর্ত, জাহান্নামীদের চোখ, কান, চামড়া এবং সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করতে, আদ ও সামুদ সম্প্রদায়ের ইতিহাস।

সংশ্লিষ্ট খবর
captcha