IQNA

মহীয়সী হযরত জয়নাব বিনতে আলী (আ.)

19:32 - January 23, 2018
সংবাদ: 2604867
আমিরুল মু'মিনিন আলী (আ.) ও খাতুনে জান্নাত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.) সুযোগ্য কন্যা হযরত জয়নাব (সা. আ.); এ মহীয়সী নারী আকিলাতুল বানী হাশিম নামে প্রসিদ্ধ। অর্থাৎ বনি হাশিমের সর্বাধিক জ্ঞানী নারী।

মহীয়সী হযরত জয়নাব বিনতে আলী (আ.)

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: ষষ্ঠ হিজরির ৫ই জমাদিউল আউয়াল ইসলামের ইতিহাসে এক বরকতময় দিন; কেননা এদিন জন্মগ্রহণ করেন রাসূলের (সা.) নাতী ও ইতিহাসের বাগ্মী নারী হযরত জয়নাব (সা. আ.)। তিনি ছিলেন হযরত আলী (আ.) এবং হযরত ফাতেমা (সা. আ.) এর তৃতীয় সন্তান। বিশ্বনবী (সা) মহান আল্লাহর নির্দেশে তার নাম রাখেন জায়নাব তথা পিতার অলঙ্কার। ইমাম হাসান ও হুসাইন (আলাইহিমুসসালাম) -এর ছোট বোন জয়নাব অনন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা, খোদাভীতি, জ্ঞান, ধৈর্য, সাহস ও বাগ্মীতার জন্য খ্যাত ছিলেন। অসাধারণ জ্ঞানের জন্য তাঁকে বলা হত বনি হাশিমের আকিলা বা জ্ঞানী।

কারবালার নানা ঘটনায়, বিশেষ করে কুলাঙ্গার ইবনে জিয়াদ ও মহাপাপী অভিশপ্ত ইয়াজিদের দরবারে এই মহিয়সী নারীর সাহসি বক্তব্য এই মহাবিপ্লব সংরক্ষণে এবং উমাইয়া শাসকদের চরিত্র উন্মোচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। কারবালার মহাবিপ্লবের প্রকৃত ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণও এই ক্ষণজন্মা নারীর কাছে চির-ঋণী। কারবালার ঘটনা-প্রবাহে একই ধরনের সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন ছোট বোন উম্মে কুলসুম (সা. আ) ও ভাতিজা ইমাম জাইনুল আবেদিন (আ) যদিও তাঁরা বন্দী হয়েছিলেন কারবালার ঘটনার পর। মহানবীর (সা) ধর্মের প্রকৃত চেতনা ও বাণী সংরক্ষণ এই মহামানব ও মহামানবীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং সংগ্রামী প্রচেষ্টার কাছে চির-ঋণী।

ইবনে কাসির নামে একজন বাকপটু আরব ছিলেন। তিনি জয়নাব (সা. আ.) এর বক্তৃতা শুনে এতোবেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েন যে, একবার কাঁদতে কাঁদতে উচ্চস্বরে বলেছিলেন: "আমার বাবা-মা তোমার জন্যে উৎসর্গিত, তোমার গুরুজনেরা সবচেয়ে উত্তম মুরব্বি, তোমাদের শিশুরা সবচেয়ে ভালো এবং তোমাদের রমণীরা সর্বোত্তম নারী। তোমাদের বংশ সকল বংশের উপরে এবং কখনোই পরাজিত হবে না।"

হযরত জয়নাব (সা. আ.) তাঁর পিতা ইমাম আলী (আ.) থেকে শুনেছিলেন যে, মানুষ ঈমানের হাকিকত উপলব্ধি করতে পারে না,যতক্ষণ না তার মাঝে তিনটি বৈশিষ্ট্য না থাকে। দ্বীনের ব্যাপারে সচেতনতা,দুর্দশায় ধৈর্য ধারণ করা এবং সৎ জীবন যাপন করা। এই মহিয়সী নারী কঠিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং ধৈর্যের অলংকার দিয়ে তিনি তাঁর মন এবং আত্মাকে সাজিয়েছেন। জয়নাব (সা. আ.)র দৃষ্টিতে সত্যের পথে দাঁড়ানো এবং আল্লাহর পথে জীবন বিলানো এমন এক সৌন্দর্য যেই সৌন্দর্য মানবতার চিরন্তন প্রশংসার দাবিদার। এজন্যেই তিনি আশুরার ঐতিহাসিক ঘটনার পর অত্যাচারী শাসকদের লক্ষ্য করে বলেছিলেন-"আমি তো সৌন্দর্য ছাড়া অন্য কিছু দেখি না।"

captcha